মাইক্রোসফট সার্ফেস (আরটি) নিয়ে চারদিন!

গতমাসে মাইক্রোসফট অনেক ঢাক-ঢোল পিটে সার্ফেস নামের নতুন এই গ্যাজেট লঞ্চ করেছে। সার্ফেস লঞ্চ অনুষ্ঠানগুলিতে মাইক্রোসফটের বড় বড় কর্মকর্তাদের গুলিস্তানের হকার বনে যাওয়া দেখে ভাবলাম এই যাদুর বাক্স চালিয়ে না দেখলেই না! উঠে পড়ে লেগে গেলাম কিভাবে এই জিনিস আমেরিকা থেকে আমদানী করা যায়। গত সপ্তাহে এক বড়ভাই’র আত্মীয়র মাধ্যমে আমেরিকা থেকে একটি সার্ফেস আনিয়ে নিয়েছিলাম। জিনিসটা হাতে পেয়ে অসম্ভব ভালো লাগছিলো। অসাধারণ ডিজাইন, এমনকি প্যাকেজিংটাই অসম্ভব সুন্দর। বলতেই হয় অ্যাপলের কাছ থেকে কিছু হলেও উৎসাহ পেয়েছে মাইক্রোসফট।

আমি একদম কম খরচেরটা কিনেছিলাম। কম খরচ বলতে কী-বোর্ডের ধরণ/রঙে এবং স্টোরেজের পরিমাপের উপর ভিত্তি করে সার্ফেসের দামের অনেক তারতম্য আছে। যেমন:

  • কী-বোর্ড বাদে ৩২ গিবা সার্ফেস আরটি – $৪৯৯
  • কালো টাচ্ কী-বোর্ড ৩২ গিবা সার্ফেস আরটি – $৫৯৯
  • কালো টাচ্ কী-বোর্ড ৬৪ গিবা সার্ফেস আরটি – $৬৯৯
  • অন্য রঙের টাচ্ কভার (সাদা, লাল, ফিরোজা, গোলাপী) – $১১৯
  • সার্ফেস কালো টাইপ কভার – $১২৯

আমি $৫৯৯ দিয়ে কালো টাচ্ কী-বোর্ড সহ ৩২ গিবা সার্ফেস আরটি কিনেছিলাম। আর মাইক্রোসফট জার্মানীর এক বন্ধুর দেয়া কুপন ব্যবহার করে $৯৯ ডিসকাউন্ট নিতে পেরেছিলাম মাইক্রোসফট স্টোর থেকে।

সারাদিন চার্জ করার পরে সেদিন সন্ধ্যায় অনেক উত্তেজনা নিয়ে সার্ফেসটা চালু করলে প্রায় তিন ঘন্টা ধরে স্ক্রিণে “অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন আমরা আপনার জন্য সার্ফেস প্রস্তুত করছি, ধৌর্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ” টাইপের একটা ম্যাসেজ ঝুলে ছিলো। অগত্যা আবার চার্জে লাগিয়ে বসে থাকলাম। আমি কিন্তু ওয়াই-ফাইতেও সংযুক্ত করিনি তখনো। চালু হবার পরে ইন্টারনেটে কানেক্ট করলাম, মাইক্রোসফট একাউন্টে লগ-ইন করলাম, কিন্তু স্টোরে গেলে আমাকে বার বার বলছে যে আমি ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত নই, অথচ আমি অনায়াসে নেট ব্রাউজ করতে পারছিলাম।

পরে বুঝতে পারলাম এখানে দেশ ভিত্তিক ঝামেলা থাকতে পারে। আমি এর আগেও মাইক্রোসফটের সংকীর্ণমনতা দেখেছি এসব ক্ষেত্রে, তাই Outlook-এ গিয়ে আমেরিকার ঠিকানা দিয়ে একটা ইমেইল খুললাম, সার্ফেস ফ্যাক্ট্রি রিসেট দিয়ে আবার ঐ ইমেইল দিয়ে চালু করয় দেখি স্টোরের ঝামেলা ঠিক হয়েছে।

আমার একটা দ্বিতীয় প্রজন্মের আইপ্যাড টু আছে। সার্ফেসটা সেটা থেকে একটু বড় হলেও স্ক্রীনে অতটা উজ্বল না। দিনের আলোতে ব্যালকনিতে ব্যবহার করা যায়না ঠিকমত। তারমানে কেউ যদি গাড়িতে বসে কাজ করতে চায়, সেটা মনেহয়না সম্ভব হবে। থিউটিটিক্যালি এটা ওজন আইপ্যাড থেকে কম বলা হলেও আমার কাছে সেরকম কিছু মনে হয়নি, বরং আকারটা একটু বাল্কি মনে হয়েছে।

উইন্ডোজ আরটি-এর মধ্যে ডেস্কটপ মোড আছে, কিন্তু সেটা কেনো আছে তা আমার কাছে পরিস্কার না। কন্ট্রল প্যানেলে কিছু করতে গেলে কখনো মডার্ণ মোডে কখনো ডেস্কটপ মোডে যায়! আমার মনেহয় ব্যহারকারীরা এতে চরম বিরক্ত হবে।

স্টোরে কাজে লাগার মতন অ্যাপের বড়ই অভাব। আর যেগুলি আছে সেই অ্যপ্লিকেশনগুলি অসম্ভব ধীর গতির! একটায় ট্যাপ করে বসে থাকতে হয়। আবহাওয়ার অ্যাপ্লিকেশনের মিনিট খানেক লাগে ডেটা নিয়ে আসতে (আমেরিকায় আরও ভালো কাজ করতে পারে উচ্চ গতির ইন্টারনেটে)।

যেই অ্যাংরি বার্ডস্ অ্যান্ড্রোয়েডে বিনামূল্যে পাওয়া যায়, বা HD ভার্সনটা আইওএসে দুই ডলার দিয়ে পাওয়া যায়, সেটা (HD কি না সেটা বলা নাই) উইন্ডোজ স্টোরে আইওএসের চাইতে আরও দেড় ডলার দাম বেশী। আমি কারণ বুঝতে পারিনি।

স্কাইপির মতন অ্যাপ্লিকেশন কত খেলনা আর স্লো হতে পারে, সেটা জানতে উইন্ডোজ আরটি ব্যবহার করা দরকার। সামনে-পেছনে ক্যামেরা থাকলেও ক্যামেরার পারফরমেন্স আমার কাছে সেরকম সুবিধার মনে হয়নি! সামনের ক্যামেরার ছবি অনেকটা ব্লার হয়ে যায় থেকে থেকে।

আমার ধারণা এর প্রসেসরে একটা ঘাপলা আছে। সবকিছুই অত্যন্ত ধীর গতির। আর পিসির সাথে ভিডিও, গান, ছবি লেনদেনের বিষয়টা অত্যন্ত বিরক্তিকর এই যুন প্লেয়ারের কারণে।

কেনার আগেই কিছু জিনিস বিবেচনায় আনা উচিৎ ছিলো, যেমন অ্যাপলের একটা পণ্য রিলিজ হলে মানুষ লাইন ধরে সেটা কেনার জন্য অপেক্ষা করে, কিন্তু উইন্ডোজ এইট বা সার্ফেসের ক্ষেত্র কিন্তু সেরকম কিছু হয়নি। জেডিনেটের লেখক বেন উড  একটা সুন্দর কথা লিখেছিলেন “Would I buy a Surface RT right now? Probably not. If it was my cash, I’d be inclined to wait for the Surface Pro, but then that’s because I use tablets like a laptop replacement (where it’s not appropriate or convenient to use a full-size device) rather than as a companion device or for gaming.” এখন সিদ্ধান্তটা ব্যবহারকারীদের। 🙂

তবে সার্ফেসের যে কোনো ব্যবহার নাই তা না, মাউক্রোসফটে উইন্ডোজ গ্রুপের প্রধান স্টিভেন সিনোফস্কি সার্ফেস দিয়ে রোলার স্ক্যাট বানিয়ে দেখিয়েছেন-

আমাদের মা-বোনেরা হয়তো পাটা (যাতে মশলা পেশা হয়) হিসেবেও সার্ফেস ব্যবহার করতে পারবেন। 🙂

মাইক্রোসফট উইন্ডোজ এইটের চমক

Tags

, ,

অপারেটিং সিস্টেমে একক অধিপতি মাইক্রোসফট এখন বড় ধরনের প্রতিযোগীতার মুখে। সফটওয়্যার জায়ান্টকে বড় চ্যালেঞ্জটি ছুঁড়ে দিয়েছে অ্যাপলের আইওএস এবং গুগলের অ্যান্ড্রয়েড। ডেস্কটপের বাজার দখলকারী স্মার্ট ডিভাইসে চলছে অ্যান্ড্রয়েড রাজত্ব। তবে ট্যাবলেট কম্পিউটার কিংবা স্মার্টফোনেও যে উইন্ডোজ কার্যকর তা প্রমাণে নতুন চমক নিয়ে এসেছে মাইক্রোসফট। আর এই বিস্ময়ের নামই উইন্ডোজ এইট। বহুল প্রত্যাশিত উইন্ডোজ এইটকে বলা হচ্ছে মাইক্রোসফটের জন্য এক নতুন মাইলফলক। ইতিমধ্যে উইন্ডোজ পৌঁছে গেছে ডিভাইস প্রস্তুতকারক (OEM partner), ডেভেলপার এবং কর্পোরেট ব্যবহারকারীদের কাছে। ব্যবহার করে দেখেছেন সাংবাদিকসহ অন্য বিশেষজ্ঞরাও। ব্যবহারকারীর দৃষ্টিভঙ্গি থেকে উইন্ডোজ এইট এর সুবিধা-অসুবিধাগুলো নিয়ে নানারকম মতামত দিয়েছেন অনেকেই।

নতুন চেহারা

চীরচেনা উইন্ডোজ ব্যবহার করতে গিয়ে এবার ব্যবহারকারীদের অনেকটাই ওয়েবপেজে ভ্রমণ করার মতো অভিজ্ঞতা হবে। চমৎকার হালকা এবং নতুন সজ্জিত মেন্যু দিচ্ছে কোনো অ্যাপ্লিকেশনে প্রবেশ না করেই আপডেট দেখার সুবিধা। যেমন: আবহাওয়ার অ্যাপ্লিকেশনে প্রবেশ না করেই দেখা যাবে বর্তমান আবহাওয়ার অবস্থা, বা দেখা যাবে টুইটার/ফেসবুকে বন্ধুর শেষ স্ট্যাটাস।

একই সঙ্গে ট্যাবলেট ও ডেস্কটপে

একই উইন্ডোজ ব্যবহার করা যাবে x86 প্রসেসরভিত্তিক ডেস্কটপ ও ARM প্রসেসরভিত্তিক ট্যাবলেট কম্পিউটারে। Touch Sensitive উইজার ইন্টারফেস হওয়ায় ডেস্কটপের পাশাপাশি ট্যাবলেটে ব্যবহার করেও অনেক স্বাচ্ছন্দ্য পাওয়া যাবে।

অসাধারণ গতি

বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, সর্বনিম্ন প্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার সংবলিত একটি কম্পিউটার একেবারে বন্ধ অবস্থা থেকে উইন্ডোজ এইট ডেস্কটপে আসা পর্যন্ত সর্বোচ্চ সময় লাগবে ১০ সেকেন্ড। উইন্ডোজ এইট এই গতির ভেলকি দেখাবে নতুন করে ডিজাইনকৃত কার্নেল থেকে। এই গতিই সম্ভবত উইন্ডোজকেই উইন্ডোজের প্রতিদ্বন্দ্বী করে তুলবে।

ডেস্কটপ চার্ম মেন্যু

ডেস্কটপের ডান পাশে প্রথমবারের মতো সংযোজিত হয়েছে এই মেন্যু। এটি একটি অ্যাপ্লিকেশনের বিভিন্ন সেটিং, বিভিন্ন বিষয় শেয়ার করাসহ নানা সুবিধা দিচ্ছে। এতে করে উইন্ডোজে কাজ করা অনেক সহজ হয়েছে। যেমন: আপনি একটি ছবি দেখছেন, চট করে তা সরাসরি ফেসবুক শেয়ার দিতে পারবেন মেন্যুটির সাহায্যে।

স্ন্যাপ মাল্টিটাস্কিং

এটি সম্ভবত উইন্ডোজ এইট এর অন্যতম সেরা ফিচার। এত দিন আমরা অনেক অ্যাপ্লিকেশন চালিয়ে রেখে কাজ করতে পারতাম। মাল্টিটাস্কিং সুবিধা থাকায় এখন আমরা পাশাপাশি দুটি উইন্ডোতে কাজ করতে পারবো এই বৈশিষ্ঠ্য ব্যবহার করে।

দুর্দান্ত ফাইল কপির গতি

হার্ডওয়্যারের সম্পূর্ণ ব্যবহার করছে উইন্ডোজ এইট। তার ফল ফাইল কপির গতিতে ঠিকই টের পাওয়া যাবে। ইউএসবি ২.০ বি ৩.০ এর যে গতি পাওয়ার কথা, ঠিক সেটাই পাওয়া যাচ্ছে উইন্ডোজ এইটে। এই বৈশিষ্ট্যটি ব্যবহারকারীদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা হবে।

উইন্ডোজ স্টোর

ম্যাক ওএস বা উবুন্টু’র পরে স্টোর থেকে এপ্লিকেশন নিয়ে ব্যবহার করার সুবিধা যোগ হলো উইন্ডোজে। এতে ব্যবহারকারীরা নির্ভরযোগ্য জায়গা থেকে প্রয়োজনীয় সব অ্যাপ্লিকেশন নিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন।

তবে ভালো কিছু করতে গিয়ে মাইক্রোসফট নিরাশ করেছে অনেক পুরনো ব্যবহারকারীকে। এর মধ্যে প্রথম সমস্যা হচ্ছে নতুন স্টার্ট মেন্যু। পুরনো উইন্ডোজ ব্যবহারকারীরা এতে একটু হতাশই হবেন বলে মনে হয়। বহুল ব্যবহৃত স্টার্ট মেন্যু উধাও হয়ে গেছে উইন্ডোজ এইট এ! সেই উইন্ডোজ ৯৫ থেকে ব্যবহারকারীরা স্টার্ট মেন্যুর মাধ্যমে প্রোগ্রামগুলো ব্যবহার করে আসছিলেন। হঠাৎ সেটা চলে যাওয়ায় এবং নতুন মেন্যু (যাকে স্টার্ট স্ক্রিন বলা হচ্ছে) অনেকের কাছে বাড়তি ঝামেলার মনে হতে পারে।

পাশাপাশি অনেক পুরনো অ্যাপ্লিকেশন বা গেম চলছে না ঠিকমতো। সঙ্গে রয়েছে একাধিক মনিটরের সমস্যা। যেমন, আপনার যদি একাধিক মনিটর ব্যবহারকারী থাকে, আর প্রাথমিক মনিটরটি যদি টাচস্ক্রিন না হয়, তাহলে বেশ ঝামেলায় পড়তে হবে আপনাকে। মাউসটি ঠিক কোথায় রাখলে চার্ম মেন্যু আসবে, সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করা বেশ ঝক্কির। জেডিনেট বা সিনেটের রিপোর্টাররা এটি পরখ করে এখন পর্যন্ত ভালো কিছু বলেননি। এ ছাড়া উইন্ডোজ এইট দিয়ে মাইক্রোসফট নিজেই ‘সারফেস’ নামের ট্যাবলেট আনছে দেখে অন্য ট্যাবলেট নির্মাতারা অখুশি। বিশেষ করে যাদের উইন্ডোজ এইট এর প্রতি আগ্রহ ছিল।

দাম-দর

বাজারে আসার আগেই অ্যাসার, ডেল, এইচপি, স্যামসাং এবং সনির মতো নির্মাতাদের নতুন পিসিতে চলে এসেছে উইন্ডোজ এইট। উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের সর্বশেষ সংস্করণ উইন্ডোজ এইট এর দাম ঘোষণা করেছে নির্মাতা মাইক্রোসফট। গত শুক্রবার থেকে বহুল আলোচিত অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ এইট আগাম বিক্রি শুরু হয়েছে। লাইসেন্সসহ পূর্ণাঙ্গ সংস্করণের দাম ৭০ ডলার। আগামী ২৬ অক্টোবর থেকে অনলাইনেও পাওয়া যাবে উইন্ডোজ এইট। এক বছর মেয়াদে উইন্ডোজ ডাউনলোড গুনতে হবে ৪০ ডলার। মাইক্রোসফটের নিজস্ব অনলাইন স্টোর ছাড়াও ওয়েব বিকিকিনি প্রতিষ্ঠান অ্যামাজন ডটকম এবং বেস্ট-বাই, স্ট্যাপলস থেকেও নতুন উইন্ডোজ কেনা যাবে। চাইলে ব্যবহারকারীরা ইন্টারনেট থেকে ১৫ ডলার খরচায় বদল করে এক বছরের জন্য উইন্ডোজ এইট নিতে পারবেন।

তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ব্যবহারকারীদের অ্যাপল বা অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস কেনার গতি দেখে মাইক্রোসফট কিছুটা হলেও শঙ্কিত। তাই দেরি না করে উইন্ডোজকে ঢেলে সাজিয়েছে, যা একই সঙ্গে ডেস্কটপ এবং ট্যাবলেটে ব্যবহার করা যায়। তবে যুদ্ধে কী হবে, তা আপাতত বোঝা যাচ্ছে না। বছরের শেষে বিভিন্ন ছুটিতে পশ্চিমা গ্রাহকরা নিজে ব্যবহার করার জন্য বা উপহার দিতে অনেক নতুন গ্যাজেট কেনেন। ফলে উইন্ডোজ এইট এর সাফল্যের খতিয়ান দেখতে নতুন বছরের শুরু পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হবে।

পুনশ্চ: লেখাটি আজকের দৈনিক সমকালে প্রকাশিত হয়েছে।

Always on My Mind অসাধারণ একটি গান!

Always on My Mind নামে আমেরিকায় এই পর্যন্ত প্রায় ২০টি গান রিলিজ হয়েছে এলবাম আকারে, যেগুলি বড়-বড় মিউজিক চার্টে অবস্থান করেছে বিভিন্ন সময়। আমি যতদুর জানি, এলভিস প্রিসলি বৌ-এর সাথে বিচ্ছেদ হবার পরে Always on My Mind নামের একটা গান রিলাজ করেন, যেটা সুপার ডুপার হিট্ হয়ে যায়।

বিভিন্ন শিল্পীদের গাওয়া Always on My Mind গানের কথ অভিন্ন না হলেও এই নামের যে-কোনো গানই অসাধারণভাবে সফল হয়েছে বিভিন্ন সময় এবং সমাদৃত হয়েছে বিশ্বজুড়ে সবরকমের সঙ্গীত শ্রোতাদের কাছে।

২০০৮ সালে রিচার্ড মার্কস আরেক শিল্পী ম্যাট স্ক্যানেলের সাথে একটি লাইভ অনুষ্ঠানে Always on My Mind নামে একটি গান করেন এবং সাথে সাথে ভক্তরা গানটির জন্য পাগল হয়ে যায়। শুধু এই গানটি বাজারে আনার জন্য ম্যাট স্ক্যানেলের সাথে Duo নামের একটি সম্পুর্ণ একুইস্টিক এলবাম বাজারে আনা হয়।

গানটি শোনা যাবে এখান থেকে:
[audio:http://omi.net.bd/files/media/Always On Your Mind.mp3]

রিচার্ড মার্কসের Right Here Waiting গানটা শোনেনি এরকম সঙ্গীতপ্রেমী অনেক কম পাওয়া যাবে। একসময় অনেক শোনা হতো গানটা। আমার এই গানটা এবং এর কথাগুলি অসাধারণ লেগেছে।

Continue reading »

সরাসরি ডেস্কটপ আর থাকছেনা উইন্ডোজ ৮-এ

অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ ৮ এরই মধ্যে বহুল আলোচিত। এই অপারেটিং সিস্টেমে মাইক্রোসফট অনেক কিছু ভালো করেছে আবার অনেক কিছুতে হতাশ করেছে ব্যবহারকারীদের। চীরচেনা ডেস্কটপ ইন্টারফেস বাদ দিয়ে চলে এসেছে মাইক্রোসফট ইউআই-তে (যা মেট্রো নামে বেশী পরিচিত), যেটা অনেক ব্যবহারকারী সহজভাবে নিচ্ছেনা। অনেকে বলছে, “দেখতে সুন্দর হতে পারে, রঙ বেশী হতে পারে, কিন্তু উইন্ডোজ ৩.১ এরকমই ছিলো!” ১৯৯৫ সাল থেকে চীরচেনা ডেস্কটপ বাদ দিয়ে ট্যাবলেটের বাজারে পাল্লা দিতেই এই পরিবর্তন বলে ধরে নেয়ে হয়েছিলো।

সত্যি কথা বলতে, এখন লিনাক্স সহ অনেক আধুনিক অপারেটিং সিস্টেম বাজারে এসেছে যাদের ইন্টারফেইস অনেক উদ্ভাবনী এবং ব্যবহারে সুবিধা। যেমন নোম ৩, একসাথে একাধিক ডেস্কটপে অনেকগুলি কাজ করার (মাল্টিটাস্কিং) জন্য এই ডেস্কটপের জুড়ি নাই! আবার নোমের ধারাবাহিকতার সাথে মিল রেখে এবং একটু ম্যাকের ফিল নিয়ে উবুন্টু এনেছে উইনিটি। সবগুলি একটা আরেকটার সাথে পাল্লা দিয়ে যাচ্ছে। সেই তুলনায় সত্যই ১৯৯৫ সালের ডেস্কটপ ও স্টার্ট মেন্যু এখন পুরাতন, আর তাই হয়তো এই পরিবর্তন!

গতবছর যখন প্রথম উইন্ডোজ ৮ উপস্থাপন করা হলো বিল্ড কনফারেন্সে, তখন বলা হয়েছিলো যে বর্তমান বাজারে উপলব্ধ ট্যবলেটগুলি শুধু কন্টেন্ট উপভোগ (consume) করতে দেয়, সেখানে কন্টেন্ট তৈরী (create) করা যায়না। উইন্ডোজ ৮ এমন একটা অপারেটিং সিস্টেম হবে যা একই সাথে ট্যাবলেট ও ডেস্কটপে চলবে, যেখানে কন্টেন্ট তৈরী ও উপভোগ দু’টি একইসাথে করা যাবে। যারা বিল্ডের কী-নোট দেখেছেন, তারা বলতে পারবেন, আর কেউ আগ্রহী হলে আগের লিঙ্ক থেকে দেখে নিতে পারেন। মাইক্রোসফট অনেক জোর দিয়ে বলেছিলো যে একই অপারেটিং সিস্টেম x86,x64 এবং ARM প্রোসেসরে চলবে! সাথে কিছু ডেমো দেখিয়েছিলো। যদিও আমরা যাচাই করিনি আর তারাও দেখায়নি পেছনে প্রসেসরের আর্কিটেকচার কি ছিলো!!

যাই হোক, শেষ পর্যন্ত কিন্তু মাইক্রোসফট সেই কথা আর রাখতে পারেনি, ট্যবলেট ও ডেস্কটপের জন্য তৈরী করতে হয়েছে আলাদা আলাদা উইন্ডোজ ৮। সেই সাথে ডেভলপারদের আগ্রহী করে তোলা হচ্ছে উইন্ডোজ ৮-এর এপ্লিকেশন তৈরী করার জন্য।

কিন্তু যেখানে লক্ষাধিক সফটওয়্যার আছে উইন্ডোজ প্ল্যাটফর্মের জন্য, সেখানে ডেস্কটপ বা স্টার্ট মেন্যু না থাকাটা ব্যবহারকারীদের কাছে হতাশার। কিছুদিন আগেও বাজারে বেশ কিছু এপ্লিকেশন ছিলো যা উইন্ডোজ ৮-কে সরাসরি ডেস্কটপে বুট করতে দিতো বা পুরাতন স্টার্ট মেন্যু ফিরে পেতে সাহায্য করতো। কিন্তু নতুন নতুন পরীক্ষামূলক সংস্করণে মাইক্রোসফট এই ফিচারগুলি বন্ধ করে দিয়েছে।

এখন জানা গিয়েছে উইন্ডোজ ৮ আরটিএম (সর্বশেষ সংষ্করণ যা ব্যবহারকারীদের কাছে বিক্রি করার জন্য ছাড়া হবে)-এ আর সরাসরি ডেস্কটপ ব্যবহার করার উপায় থাকছেনা। আগে উইন্ডোজ ৮ স্টার্ট মেন্যুতে ডেস্কটপের একটা সর্টকাট থাকলেও সেটা আর থাকবে না। সেইসাথে গ্রুপ পলেসি সম্পাদন করে সরাসরি ডেস্কটপে যাওয়ার ব্যবস্থা করে নিতে পারতেন ডোমেইন এডমিনিস্ট্রেটর এবং ব্যবহারকারীরা, সেটাও আর করতে দেবেনা মাইক্রোসফট। যদি কারও ডেস্কটপ দেখতে ইচ্ছা হয়, তাহলে কী-বোর্ডে Windows Key+D চাপ দিয়ে ডেস্কটপে যেতে হবে, বা কোনো এপ্লিকেশন যদি ডেস্কটপ ভিত্তিক হয়, তাহলে সেটাও ডেস্কটপে গিয়ে আরম্ভ হবে।

এই মুহূর্তে বিষয়টি আমি ব্যবহার করিনি, তাই সরাসরি মন্তব্য করছিনা, তবে আমি একটু হলেও ভয় পাচ্ছি মাইক্রোসফটের এই পরিবর্তনের সিদ্ধান্তে। তারা নিজেরই অফিস ২০১৩ ডেস্কটপের জন্য বের করছে, আবার হাজার হাজার এপ্লিকেশন আছে যেগুলি ডেস্কটপে চলে। এবং নতুন প্ল্যাটফর্মে আনতে হলে ১-৪ বছর সময় লেগে যেতে পারে। সেই সাথে আছে কর্পোরেট এপ্লিকেশন, যেগুলি এত সহজে পরিবর্তন করা সম্ভব না। এতদিন হয়ে গেলো, গ্রামীণফোন তাদের এপ্লিকেশন কম্পেটিবিলিটি ইস্যুর জন্য এখনো এক্সপি ব্যবহার করে বলে আমি জানি।

বিগত কয়েকবছর মাইক্রোসফট উদ্ভাবনী কিছু করার চেষ্টা করেছে এবং ব্যবপক প্রচারও করেছে কিন্তু শুরু থেকেই মনে হয়েছিলো, পাবলিক এগুলি খাবেনা। যেমন: সিলভারলাইট, সিলভারলাইট ভিত্তিক উইন্ডোজ ফোন ৭। এখন উইন্ডোজ ৮ নিয়েও অনেকটা চিন্তিত বলে মনে হচ্ছে মাইক্রোসফট।

যারা উইন্ডোজ ৮-এ স্টার্ট মেন্যু পেতে চান, তারা স্টার্ট ৮ এপ্লিকেশনটি ব্যবহার করতে পারেন। অনেকে বলছে এটা আগামী প্রকাশনার সাথেও কাজ করবে।

নতুন গ্যাজেট “আই-ফাই” মেমরি কার্ড

কয়েক বছর আগের কথা। ক্যামেরায় ছবি তুলে কম্পিউটারে নেবার সময় ভাবতাম, এত ঝামেলার দরকার কি, এরকম প্রযুক্তি বের হয়না কেন যে ছবি তোলার সাথে সাথে সরাসরি কম্পিউটারে চলে যাবে! সেবার যখন সিঙ্গাপুরে গেলাম, দেখলাম ওরা ট্যুরিস্টদের ছবি তুলছে এক জায়গায় আর প্রিন্ট করে দিচ্ছে আরেক জায়গা থেকে। মাঝখানে তারের কোনো যোগাযোগ চোখে পড়লোনা।

একটু খোঁজ নিতেই পেয়ে গেলাম আই-ফাই ডিভাইসের সন্ধান। সাধারণ একটা এসডি কার্ড হলেও ডিভাইসটি কিন্তু আমার কল্পকাহিনীকে বাস্তব রূপ দিয়েছে। আই-ফাই একটি আধুনিক ওয়াই-ফাই এনেবেল্ড ডিভাইস, একবার কনফিগার করে নিলে ওয়াই-ফাই রেঞ্জের মধ্যে থেকে ছবি/ভিডিও সরাসরি কম্পিউটার বা ক্লাউডের সাথে সিঙ্ক করে নিতে পারে। অর্থাৎ আমি আই-ফাই কার্ডটি প্রথমে আমার কম্পিউটারের লাগিয়ে কনফিগার করে নেবো, এর পরে ছবি তুললে সে প্রথমে তার নিজস্ব মেমরিতে ধারণ করে রাখবে। পরে ওয়াই-ফাই রেঞ্জের মধ্যে আসলে কম্পিউটারের সাথে বা ক্লাউডের সাথে সিঙ্ক করে নেবে। আমাকে তার লাগিয়ে বা কার্ড খুলে ডাটা ট্রান্সফার করতে হবে না।

এক নজরে দেখে নেই এই ডিভাইসের কয়েকটি কার্যকরীতা –

  • কোনো তারের সংযোগ ছাড়াই ছবি/ভিডিও সরাসরি কম্পিউটার বা ক্লাউডে আপলোড
  • সরাসরি অনলাইনে (ফেসবুক, পিকাসা, ফ্লিকর, ইউটিউব ইত্যাদি) শেয়ার
  • ক্যামেরায় জিওট্যাগ না থাকলেও ওয়াই-ফাই ব্যবহার করে ছবিতে জিওট্যাগ
  • এপ্লিকেশনের মাধ্যমে এন্ড্রোয়েড বা আইওএস ডিভাইসে ছবি/ভিডিও ডাউনলোড
  • ক্লাশ ৬ গতির ইন বিল্ট মোমরি সহ অনেকগুলি চমৎকার ফিচার

আমি Pro X2 মডেলটা প্রায় $১০০ দিয়ে কিনেছি এবং আমার কাছে জিনিসটা দারুন লেগেছে! একটা ভিডিওতে চট্ করে এর সম্পর্কে জেনে নেই-

ওহ্ একটা ঝামেলা আছে, এটা উইন্ডোজ আর ম্যাকে চললেও লিনাক্সের জন্য এর কোনো সমাধান নেই আপাতত!