নতুন করে শুরু হয়েছে পুরনো মোবাইল ফোন গ্রাহকদের রেজিস্ট্রেশন। বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) নির্ধারিত ফর্মে নতুন নিয়মে কোনো গ্রাহক রেজিস্ট্রেশন না করলে তার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে। নির্দিষ্ট সময়ের পরে কেউ রেজিস্ট্রেশনহীন মোবাইল সিম ব্যবহার করে ধরা পড়লে সংশ্নিষ্ট অপারেটরকে ১০ ডলার জরিমানা করা হবে। আমি এটাই বুঝলাম না যে বাংলাদেশের অপারেটর কেনো ডলারে জরিমানা দিবে। এই টাকা কি সিআইএ বা এফবিআই জাতীয় সংস্থাকে দেয়া হবে?
গত ১৬ অগস্ট থেকে পুরনো সিমের নতুন রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়েছে। এটা চলবে আগামী ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত। আর এই সময়ে অন্তত পৌনে দুই কোটি গ্রাহককে বিটিআরসির নির্ধারিত ফর্মে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশের মোবাইল ফোনের মোট গ্রাহক সংখ্যা আড়াই কোটি।
পত্রপত্রিকার বিভিন্ন খবর থেকে জানা যায়, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সৃষ্ট অপরাধ দমনের জন্য এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। একবার সিমকার্ড কিনে মোবাইল সংযোগ নিয়ে এখন আবার রেজিস্ট্রেশন করতে গিয়ে সময় অপচয়সহ নানাবিধ বিড়ম্বনায় পড়তে হলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে রেজিস্ট্রেশনের আগ্রহ দেখা গেছে এবং বিটিআরসির এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক গুলজার উদ্দিন আহমেদ এক পত্রিকাকে বলেন, ‘রেজিস্ট্রেশনের ফলে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যেসব অপরাধ সংঘটিত হয় তা অনেকাংশেই কমে যাবে। এ কাজটি আরো আগে করা দরকার ছিল।’
১৬ অক্টোবর পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশনের পর বিষয়টি রিভিউ করে গ্রাহকের মোবাইল ফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। দেশে ৬টি মোবাইল কোম্পানীর গ্রাহক সংখ্যা ২ কোটির বেশি। তবে এই গ্রাহকদের মধ্যে একই গ্রাহক দু’তিনটি মোবাইল ফোন কোম্পানীর গ্রাহক রয়েছেন, আবার অনেকে একই কোম্পানীর একাধিক সংযোগ ব্যবহার করেন। বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানীর সিম বিক্রয় কেন্দ্রে নজরদারি করছেন গোয়েন্দা সংস্থার ও বিটিআরসির সদস্যরা। তারা দেখছেন কোনো ডিলার রেজিস্ট্রেশন ছাড়া সিমকার্ড বিক্রি করছে কিনা। রেজিস্ট্রেশন ছাড়া বিক্রি হলে সংশ্নিষ্ট অপারেটরকে ১০ ডলার জরিমানা দিতে হবে!
নতুন নিয়মের বিষয়ে প্রতিটি মোবাইল কোম্পানী প্রচার মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে যাচ্ছে। এত কিছুর পরও বেশীরভাগ ডিলার আগের মতোই রেজিস্ট্রেশন ছাড়া সিমকার্ড বিক্রি করছে, অনেক ডিলার আবার নিজেই ১ম শ্রেণী কর্মকর্তার সিল বানিয়ে রেজিস্ট্রেশন চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে ১৯৯৩ সালে মোবাইল ফোন কোম্পানী যাত্রা শুরু করে। প্রথমেই সিটিসেল মোবাইল ফোনের যাত্রা শুরু হয়। পরে ১৯৯৬ সালে সেবা নামে আরেকটি কোম্পানী আত্মপ্রকাশ করে। এর পর সেবার শেয়ার বিক্রি হয়ে ৩-৪ বছর আগে বাংলালিংক নাম ধারণ করে। ১৯৯৭ সালে কার্যক্রম শুরু করে গ্রামীণফোন ও একটেল। এর পর পর্যায়ক্রমে টেলিটক ও ওয়ারিদের আত্মপ্রকাশ ঘটে। এই মোবাইল কোম্পানীগুলোর মধ্যে একমাত্র টেলিটকই সরকারি মোবাইল ফোন, কিন্তু নামের শেষে “লিমিটেড” লেখা হয় কেনো সেই রহস্য আমার জানা নাই।
শুরুর দিকে কোম্পানীর নিজস্ব ফর্মে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে মোবাইল ফোনের সিম বিক্রি হচ্ছিলো। পরে মোবাইল কোম্পানীগুলোর মধ্যে গ্রাহক ধরার প্রতিযোগিতা শুরু হয়। শুরু হয় স্বল্পমূল্যে সিমকার্ড বিক্রি। ফলে কোনো কোনো কোম্পানী রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই সিম বিক্রি শুরু করে। একেকজন গ্রাহককে একাধিক মোবাইল কোম্পানীর সিম সংগ্রহ করতে দেখা যায়। গত বছর ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে বিটিআরসির নির্ধারিত ফর্মে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে সিম বিক্রি শুরু হয় এবং আমার জানা মনে তখন থেকেই সর্বোচ্চ জালিয়াতি শুরু করে ডিলাররা। যে বিষয়ে বিটিআরসি অবগত না। ২৮ ফেব্রুয়ারি নিয়ম চালু করে এবং এখন তারা (কথিত) তদারকি করছে রেজিস্ট্রেশনের ব্যাপারে, তাহলে বিগত দিনে কে কি করেছে, তারা কিভাবে পর্যবেক্ষণ করবে?
একটেলের পরিচালক (সমন্বয়) রেজাউর রহমান এক পত্রিকাকে বলেন, ‘রেজিস্ট্রেশন তো মাত্র শুরু হয়েছে। ক’দিন গেলে বলা যাবে রেজিস্ট্রেশনের অবস্থা কী। তবে সরকার ভালো উদ্যোগ নিয়েছে।’
রেজিস্ট্রেশন করতে যা লাগবে: সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী ২০০৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারির আগে কেনা সব মোবাইল ফোন গ্রাহকের বিটিআরসি প্রবর্তিত গ্রাহক ফর্মে রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম করা হয়েছে। নতুন গ্রাহকদের মতো পুরনো সব মোবাইল গ্রাহককে সংশ্নিষ্ট অপারেটরের নির্ধারিত কেন্দ্রে গিয়ে প্রয়োজনীয় বৈধ কাগজপত্র জমা দিয়ে তাদের সংযোগটি সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী পুনরায় রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। আগামী ১৬ অক্টোবরের মধ্যে পুনরায় রেজিস্ট্রেশন না করলে সরকারি বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুনরায় রেজিস্ট্রেশনের জন্য লাগবে ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি। সঙ্গে দিতে হবে পাসপোর্ট অথবা যে কোনো ছবিওয়ালা আইডেনটিটি কার্ডের ফটোকপি। ফটো আইডেনটিটি কার্ড না থাকলে সংশ্নিষ্ট অপারেটর বা ডিলারের কাছ থেকে বিটিআরসি অনুমোদিত প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি উপজেলা/ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা ওয়ার্ড কমিশনার বা প্রথম শ্রেণীর গেজেটেড কর্মকর্তার কাছ থেকে সত্যায়িত করে নিতে হবে। সঙ্গে নিজস্ব সংযোগ ও সংযোগের বৈধ কাগজপত্র নিয়ে যেতে হবে।
যে নিয়মে রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে: যেসব মোবাইল গ্রাহক ২০০৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারির আগে মোবাইল সংযোগ নেওয়ার পর কাগজপত্র হারিয়ে ফেলেছেন তাদেরও রেজিস্ট্রেশন করতে সমস্যা হচ্ছে না। তবে সঙ্গে মোবাইলের সিম নিয়ে যেতে হচ্ছে। মগবাজারে গ্রামীণফোন কাস্টমার সেন্টারের ম্যানেজার ফয়সাল কবীর এক পত্রিকাকে জানান, যে গ্রাহক সিম নিয়ে এসে দাবি করবে সেটি তার তার নামে সেই সিমের নম্বরটি রেজিস্ট্রেশন করে দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে এই সিম ব্যবহারের দায়দায়িত্ব রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে নিতে হবে। তিনি জানান, গত বছর ২৮ ফেব্রুয়ারির আগে থেকে গ্রামীণফোনের নিজস্ব ফর্মে রেজিস্ট্রেশন করা হতো। গত বছর ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে বিটিআরসির নির্ধারিত ফর্মে রেজিস্ট্রেশন করা হচ্ছে।
গতকাল বিকেল ৪টার দিকে উত্তরা গ্রামীণফোন সেন্টারে গিয়ে দেখা যায় ২০-৩০ জন পুরনো গ্রাহক রেজিস্ট্রেশনের জন্য দাঁড়িয়ে আছেন। কাস্টমার সার্ভিসের কর্মীরা একের পর এক গ্রাহকের রেজিস্ট্রেশন করছেন। এক এজেন্টের কাছ থেকে জানতে পারি, শুক্রবার ২৮০ জন গ্রাহকের রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে। রেজিস্ট্রেশন করতে আসা গ্রাহক রাকিবুল ইসলাম বলেন, আমি ২০০৪ সালে গ্রামীণফোনের সিম কিনেছি। সিমের সংযোগ যাতে বিচ্ছিন্ন না হয় সে কারণে আগেভাগেই রেজিস্ট্রেশন করিয়ে নিচ্ছি। তার মতে এটা ভালো উদ্যোগ।
যে কারণে নিয়ম করা হয়েছে: মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সৃষ্ট অপরাধ দমনের জন্য মোবাইল গ্রাহকের পরিচয় নির্ণয়ের লক্ষ্য রেজিস্ট্রেশন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে গত ১৬ জুলাই বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) সভাকক্ষে একটি উচ্চ পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, রেজিস্ট্রেশনহীন সিম বিক্রয় ধরা পড়লে মোবাইল অপারেটরদের প্রতিটি সিমের জন্য ১০ ডলার হারে জরিমানা করা হবে। এতেও পরিস্থিতির উন্নতি না হলে জরিমানার হার বৃদ্ধি করা হবে বলে জানা গেছে।
একটা কথা বার বার উঠছে যে এটার ফলে না-কি অপরাধ কমে যাবে। আমি একটা জিনিস বুঝতে পারলাম না যে সরকার কিভাবে এই রেজিস্ট্রেশন দিয়ে অপরাধ কমাবে সেটাই বুঝলাম না।
বিটিআরসির পুনঃরেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম গত ১৬ আগস্ট থেকে শুরু করেছে। তা আগামী ১৬ অক্টোবরের মধ্যে শেষ করতে সব অপারেটরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সূত্র জানায়, রেজিস্ট্রেশনের সময় গ্রাহকের ঠিকানা সঠিক না হলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে। কত হাস্যকর একটা কথা! বিটিআরসি যে ফর্ম বানিয়েছে সেটাতে যদি একজন গ্রাহক তার গ্রামের সঠিক ঠিকানা লিখতে চান, পারবেন না। স্থায়ী ঠিকানা লেখার অবস্থা তো আরও থারাপ।
বিচিত্র দেশের বিচিত্র নিয়ম…
ভাইয়া,
এই সাইটে আপনি যে ফন্টটি ব্যাবহার করেছেন, তা কি একাত্তর?
ব’লতে পারবেন একাত্তর ফন্টটা কোথায় পাওয়া যাবে?
ধন্যবাদ।
বাঙলা বাঙালির হোক।
ধন্যবাদ জিজ্ঞেস করার জন্য। হ্যাঁ এই ফন্টটার নাম একাত্তর, তবে এটা আমি বিনামূল্যে বিতরণ করিনা। যাদের এটা নেবার ইচ্ছা হয়, তারা এটা কিনে নিতে পারে আমার কাছ থেকে। তবে এই বিষয়ে আলোচনা আমি এখানে আর করতে চাইছিনা।
তবে আলমগীর-এর করা একটা হিন্টেড ফন্ট আছে, যেটা অনেকটা এরকমই কাজ করবে। সেটা সম্পর্কে আরও জানা যাবে: http://www.ekushey.org/index.php?blog/show/Free-Hinted-font-Released-for-Web-Use.html থেকে…
Hello your article is funny.
I like your diary..
thank you again
aah fata fati