Tags

,

২০১১ সালে বেশ কিছু গ্যাজেট নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করার সুযোগ হয়েছে। এর মধ্যে এন্ড্রোয়েডের বেশ কিছু ডিভাইস ছিলো। এন্ড্রয়েড নিয়ে যত ঘেঁটেছি, তিক্ততা ততই বেড়েছে। অপারেটিং সিস্টেম নির্মাতা কোনো লিমিটেশন নির্ধারণ করে না দিলে হার্ডওয়্যার কিনে ক্রেতাদের বিপদে পড়তে হয়।

আমি কেনো এন্ড্রোয়েডের জিভাইসগুলি নিয়ে বিরক্ত সেটি একটা বলার প্রয়োজন মনে করছি। এই বছর শুরুর দিকেই এন্ড্রোয়েড মার্কেটের কোনো কনসিসটেন্সি ছিলোনা। একজন একটা ভালো এ্যপ্লিকেশন বানালে বোঝার উপায় নেই, যতক্ষণ সেই ডেভলপার বা কোম্পানী ঐ এ্যপ্লিকেশনের প্রচার না করছে বা ব্যবহারকারীরা ব্যবহার না করে রেটিং না করছে। শত শত এ্যপ্লিকেশন প্রতিদিন আসছে মার্কেটপ্লেসে, কিন্তু কেউ জানেনা কোথায় যায় সেগুলি। তাছাড়া ডিভাইসের কোনো স্ট্যান্ডার্ড না থাকায় কোথায় কি চলবে বলা মুশকিল! একই এ্যংগ্রি বার্ডস্ কোনো ডিভাইসে চলে, কোনোটায় চলেনা। ডিভাইস কেনার বা ব্যবহার করার আগে বলা মুশকিল কোনটায় কি চলবে। একটায় বাংলা সমর্থন করে, আরেকটায় করেনা! এই ঝামেলাগুলির জন্য আমি অনেকটা বিরক্ত। আর নিম্নমানের ডিভাইস দিয়ে বাজার সয়লাব!

যখন প্রথমবার এমাজন কিন্ডেল ফায়ারের নাম শুনলাম, ভাবলাম এবার হাতের নাগালে একটা ভালো জিনিস আসছে। মানুষ কোয়ালিটি জিনিস পাবে। আমিও একটা কেনার ব্যবস্থা করলাম আমেরিকা থেকে। গত ২৭ তারিখে হাতে এসে পৌছায় ডিভাইসটি। চালু করেই টাসকি খেলাম! শুরুতেই ক্রেতার নাম এবং বিলিং তথ্য দেখাচ্ছে! মানে আমার যেই কাজিন এটা কিনেছে তার ক্রেডিট কার্ডের তথ্যও ভরে দেয়া আছে ভেতরে। সাথে সাথে এমাজনে গিয়ে আমার কার্ড দিয়ে একটা একাউন্ট খুলে আমার তথ্য দিয়ে ডইভাইসটি চালু করলাম। আমি আমার কার্ড দিলাম, এমাজন আমার কার্ড থেকে $০.১০ কেটে আাবার ফেরৎ দিয়ে দিলো এবং নিশ্চিত করলো যে কার্ডটা ঠিক আছে আর এরপরই শুরু হলো খেলা!

আমি এপস্ সেকশনে গিয়ে ফ্রি কিছু এপ্লিকেশন নামানোর চেষ্টা করে দেখলাম, আমাতে জানালো যে “আমাকে আমেরিকার কার্ড ব্যবহার করতে হবে ফ্রি এপ্লিকেশন ব্যবহার করার জন্য” একটু হতাশ হলাম। হাল না ছেড়ে একটু গিকি ঘাঁটাঘাঁটি করা শুরু করলাম। যখন কিন্ডেলটা নেবার চিন্তা করেছিলাম, তখনই জানতাম যে একটু হ্যাক করতে হতে পারে, কারণ কিন্ডেল এখনো সেভাবে তৈরী না।

  • থ্যাংকস গিভিং এবং ক্রিসমাসের সেল ধরার জন্য এমাজন খুব তাড়াহুড়ো করে কিন্ডেল ফায়ার রিলাজ করে,
  • এমাজনের ডেভলপার টিম এখনো তৈরী না (এখনো তারা ডেভলপার হায়ার করছে),
  • এন্ড্রোয়েডের মার্কেটপ্লেস ব্লক করে নিজেদের মার্কেটপ্লেস স্টাবলিশ করার চেষ্টা করে,
  • হার্ডওয়ার বিক্রি করার চাইতে তাদের মূল লক্ষ্য ক্লাউড সার্ভিস বিক্রি করা, যেমন মুভি ভাড়া করা, বই কেনা ইত্যাদী।

যেহেতু ক্লাউড দিয়ে ভবিষ্যতে ব্যবসা হবে, তাই ভেন্ডর লক করে কমদামে ডিভাইসগুলি বিক্রি করছে তারা। ৫/৬ ঘন্টা ঘাঁটা ঘাঁটি করে দেখলাম তাদের নতুন আপডেট ৬.২ হ্যাক করার জন্য আগের পন্থাগুলি কাজ করছে না। আরও সময় নিয়ে বসলাম এবং মনে একটা ভয় কাজ করে, যদি ডিভাইসটি নষ্ট হয়ে যায়! পরে এক্সডিএ ডেভলপারদের এই থ্রেড থেকে সাহায্য নিয়ে হ্যাক করে ফেললাম কিন্ডেল ফায়ার। এমাজনের জিনিসপত্র বাদ দিয়ে গো লঞ্চার লোড করলাম। এখন এটা গ্যালাক্সি ট্যাবের মতন ব্যবহার করা যায় আর এন্ড্রোয়েড মার্কেটপ্লেস থেকে সবকিছু ডাউনলোড করে ব্যবহার করা যায়!

মাত্র ১৯ ঘন্টা ব্যবহার করেছিলাম ডিভাইসটা (পরে এক ছোট ভাই নিয়ে নিয়েছে, অবশ্যই টাকার বিনিময়ে), হ্যাক করে লোড করেছিলাম বাংলা ফন্ট, কিন্তু ঠিক মতন কাজ করেনি। বাংলা দেখার জন্য ওপেরা মোবাইল ব্রাউজার ব্যবহার করতে হবে আপাতত। হ্যাক করার পরে মুভি চালানোর সফটওয়্যার লোড করেছি এবং কাজ করেছে খুব সুন্দর। হার্ডওয়্যার রেন্ডারিং সমর্থন করে মৃভি প্লেব্যাক করার ক্ষেত্র। হ্যাক করে ব্যবহার করলে, এটা ইন্টারনেট ব্যবহার আর এন্টেরটেইনমেন্টের একটা ডিভাইস হিসেবে ভালো কাজে দিতে পারে। এর সাথে আসা সিল্ক ব্রাউজার আমার কাছে ভালো লেগেছ। দামের সাথে তুলনা করলে ঠিকই আছে, কিন্তু হাতে টাকা থাকলে আমি এখনো আইপ্যাড কেনার পরামর্শ দেবো…

শেষে একটা কথা বলতে চাই, কেউ যদি কারও জন্য কিনে দেয়, সেই ক্ষেত্র অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে যাতে নিজের ক্রেডিটকার্ডের মতন তথ্য ডিভাইসে দিয়ে না দেয়। আমি এমাজনে দেখেছি এই অপশন আছে, অন্যের জন্য কেনা যায় এবং তখন ওরা তথ্যগুলি লোড করে দেয়না। 🙂