গতকাল ছিলো ইবানের জন্মদিন, আর মাইক্রোসফট বাংলাদেশের সাথে কাজ না করার সিদ্ধান্তটাও বাস্তবায়ন করলাম গতকালকে। বেশ কিছু পত্রিকা/অনলাইন মাধ্যমের বদৌলতে এই খবর এখন পুরাতন, কিন্তু অনেকেই প্রশ্ন করছে কেন এই সিদ্ধান্ত আর ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি।
মাইক্রোসফটের সাথে কাজ করে আসছি সেই ২০০২ সাল থেকে, মাইক্রোসফটের তৈরী করা ছোট বড় প্রায় ১২০টি পণ্য ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ২০০৯ সালে যখন সুযোগ হয়, তখন এক্সপ্লোর করার সুযোগটা হাতছাড়া হতে দেইনি। কাছে থেকে গত আড়াই বছরে বহু কিছু দেখেছি এবং শিখেছি। সে এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। আমার পরিচিত অনেক ডেভলপার আছে, যারা কি করবে, কিভাবে করবে বুঝতে পারছেনা। অথচ মাইক্রোসফটের একটি প্রযুক্তির উপরে অভিজ্ঞতা অর্জন করলেই ভবিষ্যত নিয়ে আর চিন্তা করতে হয়না। গত জানুয়ারি মাসের একটা ছোট্ট জরিপে দেখানো হয়েছে যে উন্নতবিশ্বে প্রায় দেড়লাখ ডায়নামিক্স ন্যাভ ডেভলপার দরকার ছিলো ২০১১ সালে এবং তিনগুন ডেভলপার দরকার ২০১২ সালে, একই জরিপে শেয়ারপয়েন্টের কথাও এরকম বলা হয়েছে; তবে শেয়ারপয়েন্টের ডেভলপার দরকার আরও বেশী। এদের পারিশ্রমিকও কিন্তু কম না, নবীনদেরই প্রতি মাসের বেতন হতে পারে দুই হাজার থেকে শুরু করে পাঁচ হাজার ডলার পর্যন্ত! সাথে পারিবারিক স্বাস্থ্য বীমা, ভিসা স্পন্সার সহ থাকে নানান সুবিধা। আমার জানা মতে বাংলাদেশ থেকে ৩/৪ জনের বেশী এই সুবিধাগুলি নিতে পারেনি। শুধু বাংলাদেশেই ১০জন মানুষ দরকার যারা মাইক্রোসফটের লাইসেন্স এক্সপার্ট, কিন্তু এরকম মানুষ পাওয়া কঠিন।
যেজন্য এই কথাগুলি বললাম, আমার লক্ষ্য ছিলো এই জিনিসগুলি আমাদের দেশের নব্য-ডেভলপারদের সামনে তুলে ধরা, যাতে তারা অনায়াসে একটা ভালো ক্যারিয়ার গঠন করতে পারে। আমার শক্তি আমাদের দেশের ডেভলপাররা। আমাদের কিন্তু বিশাল একটা ডেভলপার কমিউনিটি আছে যাদের মন মানসিকতা অত্যন্ত খোলামেলা। একজন প্রতিষ্ঠিত ডেভলপারের কাছে একজন নবীন ডেভলপার কোনো সাহায্য চেয়েছে, কিন্তু পায়নি এমনটা হয়না। শুধু এদের এক ছাদের নিচে নেয়ার প্রয়োজন ছিলো। আমাদের খুবই পরিচিত গ্রুপ পিএইচপিএক্সপার্টস, সারা বিশ্বের ওয়েব ডেভলপাররা সেখানে কোলাবরেট করছে এবং উপকৃত হচ্ছে। পিএইচপিএক্সপার্টসের যাত্রা কিন্তু ভারত বা আমেরিকা থেকে শুরু হয়নি, হয়েছে এই বাংলাদেশ থেকে। ছোট ছোট এরকম আরও উদাহরণ আছে যা প্রমাণ করে আমরা কত শক্তিশালী এবং একটু সাহায্য পেলেই আমরা অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলতে পারি।
এই চিন্তা মাথায় রেখেই শুরুকরেছিলাম যাত্রা মাইক্রোসফটের সাথে। যাত্রার অভিজ্ঞতা অসাধারণ; চমৎকার একটা দল ছিলো মাইক্রোসফট বাংলাদেশে আর এর বাহিরে মাইক্রোসফট স্টুডেন্ট পার্টনারদের নিয়ে আমার দলটা ছিলো আরও শক্তিশালী। অনেক চড়াই উৎরই-এর মধ্যেও আমরা কাজ করে গিয়েছি স্বাভাবিকভাবে এবং জয়ের মুখ দেখেছি। কিন্তু হঠাৎ করেই আমাদের দলটিতে ভাঙ্গে যেতে শুরু করলো! এই বছর জানুয়ারী মাসে আমাদের কান্ট্রি ম্যানেজার ফিরোজ মাহমুদ আমাদের অনেকটা চমকে দিয়েই পদত্যাগ করলেন, সাথে সাথে মাইক্রোসফট শ্রীলঙ্কার কান্ট্রি ম্যানেজার আমাদের দেখাশোনার দ্বায়িত্ব নিলেন কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছিলো যে মাইক্রোসফটের এই সিদ্ধান্তটা সঠিক না। শ্রীলঙ্কার কান্ট্রি ম্যানেজারের নিজেরই অনেক বড় দ্বায়িত্ব, সে নিজের কাজের পাশাপাশি কিভাবে আমাদের সহায়তা করবে সেটা ছিলো সবার প্রশ্ন। বিভিন্ন দিক থেকে আমাদের চ্যালেঞ্জ বেড়ে যেতে লাগলো। সবকিছু কেমন যেনো এলোমেলো হয়ে যেতে লাগলো এবং দলের লোকেরা একে একে বিভিন্ন দিকে চলে যেতে থাকলেন।
লোক কমে যাওয়ায়, শেষে আমার কাজের বাহিরে অনেক কাজ বেড়ে গেলো! একটা কিছু করতে হলে সেটার কোটেশন নেয়া থেকে শুরু করে পেমেন্টের ভ্যাট/ট্যাক্স হিসাবও আমাকে করতে হচ্ছিলো, এবং হাঁপিয়ে গিয়ে গত মার্চ মাসে আমার কান্ট্রি ম্যানেজারকে এসব কথা বললে উনি আমার কাছে সময় চান। গত ৫ তারিখে আমাকে নতুন কিছু অফার করেন, কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো- টাকা পয়সা বেশী হয়তো পেতে পারি, কিন্তু সেটা দিয়েতো আর দু’টা হাত আর একটা মাথা কিনতে পারবোনা, তাই না? তাই আমি অনুরোধ করলাম আমাদের চুক্তির ইতি ঘটাতে এবং উনি কথা না বাড়িয়ে আমার অনুরোধ রাখেন।
আমি চাইলে মার্চেই ছেড়ে দিতে পারতাম, কিন্তু কমিউনিটির কাছে আমার যে প্রতিশ্রুতি আছে সেটা নষ্ট হয়ে যেতো। তাই ইমাজিন কাপ শেষ করে, তাদের সকল দ্বায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে শেষ করলাম মাইক্রোসফটের সাথে আমার যাত্রা।
আমি শুরু থেকেই কমিউনিটির কাছে প্রতিশ্রতিবদ্ধ এবং ভবিষ্যতে যাই করি, চেষ্টা করবো তা হবে কমিউনিটির জন্যই কাজ করে যেতে। আশা করবো আমার বন্ধু এবং শুভাকাঙ্খীরা আমার জন্য তাই দোয়া করবেন; আর পক্ষান্তরে আমিও মাইক্রোসফট বাংলাদেশের শুভকামনা করি, আশাকরি সকল জটিলতা পার করে আগামীতে তারা অনেক বড় হয়ে উঠবে এবং বাংলাদেশের অর্থনীতিতে দৃষ্টান্তমূলক ভুমিকা পালন করবে।
Arif Nezami said:
ভবিষ্যতের জন্য শুভ কামনা । 🙂
Rafiul Sabbir said:
চাকরি ছেড়ে দেয়ার ব্যাপারে অমি ভাইয়ের নিজের লেখাটার জন্য অপেক্ষা করতেছিলাম,সেটা অবশেষে লিখছেন উনি।.
ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা অমি ভাই 🙂
Anup Debnath said:
🙂
Shuranjana Nil said:
good luck vaia…….. 🙂
Omi Azad said:
Thanks 🙂
Tapas Dutta said:
kub sundar.
Mohammad Nasiruddin said:
Best of Luck brother!
Omi Azad said:
Thanks 🙂
অজ্ঞাতনামা কেউ একজন said:
আমি যতদূর জানি কাজের লোক কখনো……অকাজে সময় অপচয় করে না…… ভবিষ্যতের জন্য শুভ কামনা…রইল.
Md Wahiduzzaman Khan said:
But vaia amar to mone hoi Microsoft er din ses. Taile ki ekhn Microsoft er technology adot kora thik hbe? Ei jemon Windows phone development, SharePoint ei development side gula te gele ki ekhno valo career gora possible?
Omi Azad said:
Can you please write English/বাংলা?
Md Wahiduzzaman Khan said:
I saw in many blogs about Microsoft is that “the glory of Microsoft is over”…..So I want to know that if I choose Microsoft technology like windows phone development or share point development is their still any opportunity to make a good career on that sector?
Omi Azad said:
See a company like Microsoft will not die tomorrow for sure. There are countless enterprises running MS platform worldwide. So they are not going to be obsolete soon. About Windows Phone, I don’t think that’s a stable platform, but to learn something new or if you want to play with it, you can give it a try. But I don’t think anyone is taking Windows Phone seriously, after they killed 7 and brought 8. But I’d recommend you to focus on serious stuffs, like Sharepoint, Biztalk etc. Money is there actually. 🙂
Md Wahiduzzaman Khan said:
Thanks vaia ,really help full tips………..!!!!
Pingback: মাইক্রোসফটের শেষ চেক্! | Reality Bites