বিশ্বখ্যাত ইলেকট্রনিকস পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাপলের নিজস্ব দোকানগুলোর সামনে হাজার হাজার মানুষের সারিবদ্ধ লাইন দেখে বলা স্বাভাবিক “ওরে! কত্ত বড় লাইন রে!”। আর রাতদিন ক্লান্তিহীনভাবে রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে এই সারিবদ্ধ লাইনে দাঁড়িয়ে (কখনো শুয়ে বা বসে) থাকার একটাই লক্ষ কখন হাতে আসবে বর্তমান সময়ের ক্রেজ অ্যাপলের বিশ্ব মাতানো আইফোন। বহু প্রতীক্ষার পর গত ২৯ জুন বাজারে আসে মাল্টিমিডিয়া ও ইন্টারনেট অপশন সংবলিত এই সেলফোন। বাজারে আসার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই এই সেলফোনের মজুদ শেষ হয়ে যায়। তবে এশিয়ার বাজারে আইফোন পেতে ২০০৮ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে জানিয়েছে অ্যাপল। যারা এই সেলফোন হাতে পেয়েছেন এমনকি ব্যবহারও করছেন তারা তো বড্ড খুশি কিন্তু বিপত্তি ঘটেছে অন্য জায়গায়। যারা হাতে পাননি তারা EBay-এর মতো নিলাম ওয়েবসাইটগুলোর সমমুখীন হচ্ছেন। যেখানে প্রায় ১০০০ ডলার দামে আইফোন বিক্রি করা হচ্ছে। কোম্পানি নির্ধারিত চার গিগাবাইটের আইফোনের দাম ৪৯৯ ডলার এবং আট গিগাবাইটের দাম ৫৯৯ ডলার। তারপরও থেমে নেই এই আইফোনপ্রেমীরা।

আইফোনের বৈশিষ্ট্য: এর ডিজাইন রেডিকেল। রয়েছে সিলভার ডিভাইস সমেত ৩.৫ ইঞ্চি গ্লাস স্ক্রিন। এই স্ক্রিনে ফিঙ্গার টিপ দিয়ে অনায়াসে কাজ করা যায়। এই বড় আকারের স্ক্রিনে বইয়ের পাতার মতোই সবকিছু দেখা সম্ভব যার নাম কভার ফ্লো সোজ। ফলে অনেক মিউজিক কালেকশনই নেভিগেশন করা যায় একসাথে। রয়েছে জটিল ২ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা। এর ৪ গিগাবাইট মেমোরিতে রাখা যায় ৮০০ গান এবং ৮ গিগাবাইট মেমোরিতে ধারণকৃত গানের সংখ্যা হলো ১৮০০। ওয়েব ব্রাউজিং, ই-মেইল ও ভিডিও দেখার সুবিধা রয়েছে এই আইফোনে। এর স্ক্রিন বড় হওয়ায় ইউটিউবের ভিডিওগুলো অনায়াসেই দেখা সম্ভব। এই সেলফোনের মাধ্যমে ৮ ঘণ্টা কথা বলা বা ৬ ঘণ্টা ইন্টারনেট ব্যবহার করা বা ৭ ঘণ্টা ভিডিও দেখা এমনকি ২৪ ঘণ্টা অডিও শোনা যাবে। এর স্ট্যান্ডবাই সময় ২৫০ ঘণ্টা। এটি ১১.৬ মিলিমিটার পাতলা।

যে বিষয়গুলো নিয়ে উঠেছে সমালোচনা: আইফোনের ইন্টারনেট কম গতিসম্পন্ন। এজন্য ব্যবহারকারী ও বিশেষজ্ঞরা এটির ধীরগতির নেটওয়ার্কেই দায়ী করছে। এতে থ্রি জি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা যায় না। নেই ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং ও ভয়েস অ্যাক্টিভেট ডায়ালিং সুবিধা ও গেম খেলার অপশন। আবার ইউটিউবের সব ভিডিও দেখা যায় না। আইফোনে ফ্ল্যাশ দিয়ে তৈরি ওয়েবসাইটগুলো ভালোভাবে হ্যান্ডেল করা যায় না। এমনকি বিল্টইন রিংটোন ছাড়া অন্য কোনো রিংটোন সেট করা যায় না। সমালোচনা থাকলেও থেমে নেই আইফোনপ্রেমীরা। তাদের বিশ্বাস ভালো কিছুর সাথে কিছুটা মন্দ তো থাকবেই। কর্তৃপক্ষের আশা এই আইফোন বিক্রি হবে ১ কোটি, তাও আবার ২০০৮ সালের মধ্যে।

দেখি আমরা কবে আইফোন হাতে পাই!