Tags

, , , , , , , , , , , , , , ,

IE 8ছাড়ে দে মা কাঁন্দে বাঁচি!!!

পুরাতন কথা, কিন্তু বেশ চলে। যারা একটু কম্পিউটার সচেতন, তারা ইন্টারনেট এক্সপ্লোডার ব্যবহার করে এই কথাই বলবেন।

আমরা যারা না জেনে না বুঝে মাইক্রোসফটের ইন্টারনেট এক্সপ্লোডার (না ভুল লিখি নাই, এটাই সঠিক বানান হওয়া উচিৎ) ব্যবহার করি, তারা প্রতি মুহূর্তেই বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখিন হচ্ছি। এর জন্য অবশ্য কাউকে দায়ী করা ঠিক হবেনা। এখনো ৯০% কম্পিউটার ব্যবহারকারী মনে করেন ইন্টারনেট মানেই হচ্ছে ডেস্কটপে নীল রঙের e চিহ্নটা। কিছু করার নাই।

ইন্টারনেট এক্সপ্লোডারের নিরাপত্তাজনিত অনেক সমস্যা ছিলো, আছে এবং আশা করা যায় থাকবে। গতকালকে মাইক্রোসফট মিক্স ০৮-এ ইন্টারনেট এক্সপ্লোডারের ৮ নম্বর সংষ্করণটির বেটা (এখনো শেষ হয়নি) ১ ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে। আর এটা ব্যবহার করতে গিয়ে আমার যেই অভিজ্ঞতা হলো তা বলি।

উপরের ছবিটি মাইক্রোসফটের সাইট থেকে নেয়া, দেখা যাচ্ছে We Heard You লেখা আছে। আমরা কি চিৎকার করছিলাম আর মাইক্রোসফট সেটা শুনতে পেয়েছে! না, ইন্টারনেট বোদ্ধাদের প্রয়োজনের শেষ নাই, তাদের প্রয়োজন মেটায় এরকম সমাধান যারা দিতেপারে বোদ্ধারা সেটাই ব্যবহার করে। বাজারে ইন্টারনেট এক্সপ্লোডারের পাশাপাশি আছে মজিলা ফায়ারফক্স, অপেরা, সাফারি। এখন ইন্টারনেট এক্সপ্লোডার ব্যবহারের চাইতে যেহেতু ঐ তিনটা ব্রাউজার ব্যবহারে বেশী সুবিধা পাওয়া যায়, তাই স্বভাবতই মানুষ ইন্টারনেট এক্সপ্লোডার ছেড়ে ঐগুলি ব্যবহার শুরু করছে।

এই বাজার হাতছাড়া যাতে না হয়েযায় তারজন্য ইন্টারনেট এক্সপ্লোডার ৭ পুরাতন না হতেই ৮ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলো মাইক্রোসফট। অনেকে ৭-এই অভ্যস্ত হয়নি, আবার ৮।

ইন্টারনেট এক্সপ্লোডার ৫.৫, ৬.১ এবং ৭ হচ্ছে মাইক্রোসফটের বিপর্যয়। গুগল্-এর পরিসংখ্যান দেখলে জানা যায় যে ঐ সংস্করণগুলির ব্যবহার কত কম। এখনো ৬০% ব্যবহারকারী ইন্টারনেট এক্সপ্লোডার ৬ চালায়।

এখন দেখি এই ৮ নম্বর সংস্করণের কি কি ফায়দা আছে-

একটা নতুন এবং ইউনিক সুবিধা হলো এক্টিভিটিস। আগে আমাদের বিভিন্ন তথ্য এক সাইট থেকে নিয়ে অন্য সাইটে দিয়ে আরও তথ্য বের করতে হতো। সেটা সুবিধা যোগ করেছে সরাসরি। যেমন ধরুন আপনি একটি সাইট ব্রাউজ করছেন, সেখানে একটা ঠিকানা দেয়া আছে, ইন্টারনেট এক্সপ্লোডার ৮ ঠিকানা বুঝতে পারলে তার পাশে সয়ংক্রিয়ভাবে এক্টিভিটিস বোতাম দেখাবে যাতে ক্লিক্ করে আপনি উক্ত ঠিকানাটি লাইভ ম্যাপে দেখতে পারবেন। ঠিক এভাবেই বিভিন্ন তথ্য ভিন্ন ভিন্ন ওয়েব এপ্লিকেশনে নিয়ে যেতে পারবেন।

ফায়ারফক্সে একটা টেক্সট নির্বাচন করে তার উপরে মাউসের ডান বোতাম ক্লিক্ করে আমরা কয়েকটা কাজ করতে পারতাম, যেমন গুগলে ঐ লেখা অনুসন্ধান করা, কোনো লিঙ্ক থাকলে তা বন্ধুদের ই-মেইল করে জানানো ইত্যাদি, ঠিক সেরকমই একটি সুবিধা আছে সাফারিতে, আইফোনে সাফারি ব্যবহার করতে করতে কোনো ফোন নম্বর পেয়ে গেলে আপনি সাফারি থেকে বের না হয়ে সরাসরি সেই নম্বরে ফোন করতে পারেন। সেরকম সুবিধাই নকল করে বের হয়েছে ইন্টারনেট এক্সপ্লোডার ৮-এর এই সুবিধাটি। তবে আমার বিশ্বাস অচিরেই ফায়ারফক্সে এই সুবিধা চলে আসবে।

এরপরে যেই সুবিধাটি যোগ করা হয়েছে তা হলো ট্যাব রিকভারি। আমরা ভুল করে ফায়ারফক্স/অপেরা/সাফারি বন্ধ করে ফেললে পরে যদি আবার সেগুলি চালু করে, তাহলে আমরা যেই ওয়েব পেজগুলি খুলে রেখেছিলাম তা আবার উদ্ধার হয়ে যায়। এবার এই সুবিধাটিই নকল করে লাগানো হয়েছে ইন্টারনেট এক্সপ্লোডার ৮-এ। ইন্টারনেট এক্সপ্লোডারের ট্যাব ব্যবহারের অভিজ্ঞতা অনেকেরই তিক্ত, তাই আমি এই নমুনা নিয়ে কথা বলে অভিজ্ঞতা আরও তিক্ত করতে চাইছি না।

এবারের সুবিধাটির নাম ফেবারিট বার। এই বার অপেরা/সাফারি/ফায়ারফক্সে ছিলোই। সেটা নকল করা হয়েছে। তবে এখানে একটা সুবিধা বাড়তি যোগ করা হয়েছে যে, আপনি ফেবারিট বারে কি কি লিঙ্ক দেখতে চান তা নির্বাচন করতে পারবেন।

এই ছবির নমুনা দেখলে বুঝতে পারবেন কিভাবে ফেবারিট বারে আপনার পছন্দনীয় ঠিকানা যোগ করে রাখতে পারবেন।

এর পরের সুবিধার নাম হলো সেফটি ফিল্টার। ফায়ারফক্সে একটা অপশন আছে যা কি-না আপনি যেই সাইটে ভ্রমণ করতে যাচ্ছেন তার তথ্য গুগল্-কে জিজ্ঞেস করে, এদিকে গুগল্ খারাপ সাইটগুলির তথ্য আর্কাইভ করে এবং আপনি যদি সেই সাইটগুলিতে যেতে চান, তাহলে আপনাকে প্রতিরোধ করে। ঠিক সেটারই নকল করা হয়েছে ইন্টারনেট এক্সপ্লোডার ৮-এ। তবে ফায়ারফক্স যা সংয়ক্রিয়ভাবে কর, এটা আপনাকে হাতে হাতে করতে হবে ইন্টারনেট এক্সপ্লোডার ৮-এ। 🙂

এর পরের সুবিধাটির নাম ওয়েব স্লাইস। হ্যাঁ এটা একেবারেই একটা নতুন সুবিধা। যারা বিভিন্ন ওয়েব সাইটে সাবস্ক্রাইব করে থাকেন, তারা ছোটো ছোটো স্লাইসের মধ্যে শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় তথ্য দেখতে পারবেন। এর আগে অন্য কোনো ব্রাউজারে এই সুবিধা দেয়া হয়নি। এটা কিছুটা RSS রিডারের মতন কাজ করে।

যারা ইন্টারনেট এক্সপ্লোডার ৮ ডাউনলোড করতে চান তারা এই ঠিকানায় গিয়ে ডাউনলোড করতে পারেন।

শেষ কথা একটাই, ইন্টারনেট এক্সপ্লোডার ব্যবহার করলে আসলেই আপনার কম্পিউটার এক্সপ্লোড করবে। আপনি না জানতেই আপনার কম্পিউটারে ভাইরাস/মলওয়্যার/স্পাইওয়্যার ইনস্টল হয়ে যাবে। এরপরও কি আপনি এই ব্রাউজার চালাবেন? 🙁