এ দেশে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার মূল হোতা বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটর ‘সিটিসেল’। অভিযোগ রয়েছে, এই অবৈধ ব্যবসার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া ছাড়াও ভিওআইপি যন্ত্রপাতি আমদানি করে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায়ীদের কাছে বাজারজাত করেছে তারা। তাছাড়া ভিওআইপি যন্ত্রপাতি আমদানির নামে শত শত কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে কোম্পানিটি। এ ব্যাপারে বিটিআরসির পক্ষ থেকে মামলা করা হলেও এখন মামলাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য নানা ফন্দিফিকির চালিয়ে যাচ্ছে সিটিসেল কর্তৃপক্ষ। প্রশ্ন উঠেছে, এভাবেই কি পার পেয়ে যাবে সিটিসেল?
সূত্র মতে, বিগত বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোর্শেদ খানের মালিকানাধীন সিটিসেল বেপরোয়া অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা শুরু করে। এই ব্যবসার মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় সিটিসেল। শুধু অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসাই নয়, একই সঙ্গে মোর্শেদ খানের মন্ত্রীত্বের প্রভাব খাটিয়ে এবং সে সময় বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার সহায়তায় একচেটিয়াভাবে দেশে ভিওআইপি যন্ত্রপাতি আমদানি করে সিটিসেল (প্যাসিফিক টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেড)। জানা যায়, এফডব্লিউটি আমদানি সকল জিএসএম অপারেটরের জন্য বেআইনি হলেও মোর্শেদ খানের ক্ষমতার প্রভাবে বিটিআরসি শুধুমাত্র সিটিসেলকেই এফডব্লিউটি আমদানির অনুমতি দিয়েছিল। এসব যন্ত্রপাতি উচ্চ মূল্যে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দিয়েছে সিটিসেল। তাছাড়া অনুমোদিতভাবে এফডব্লিউটি আমদানির অন্তরালে সিটিসেল কর্তৃপক্ষ চালিয়েছে রমরমা হুন্ডি বাণিজ্য। সে সময় সিটিসেলকে এ ব্যাপারে সহায়তা করেছিল বাংলাদেশে অবস্থিত দুটি চীনা কোম্পানি হোয়াই এবং জেডটিই। এ কোম্পানি দুটির মাধ্যমে যন্ত্রপাতি আমদানি করতে গিয়ে সিটিসেল ওভার ইনভয়েসের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, ২০০৩ সালে বিটিআরসির স্পেকট্রাম ম্যানেজমেন্ট বিভাগ সিটিসেলের এমডিকে লেখা এক চিঠিতে অবিলম্বে তাদের ভিওআইপি সার্ভিস বন্ধ করতে বলে। কিš’ সিটিসেল কর্তৃপক্ষ এতে কর্ণপাত করেনি। আর এ ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় সিটিসেলের মালিক ও জোট সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোর্শেদ খানের ক্ষমতার প্রভাবকে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, ভিওআইপি ব্যবসার সুবিধার জন্যই বর্তমান বিশ্বে জনপ্রিয় পদ্ধতি জিএসএম-এর পরিবর্তে সিডিএমএ পদ্ধতিতে সংযোগ দিচ্ছে সিটিসেল। এই পদ্ধতি গ্রাহকপ্রিয়তা না পাওয়ায় টিকে থাকার জন্য সংযোগ বিক্রির পরিবর্তে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসাকেই মূল ব্যবসা হিসেবে বেছে নিয়েছে সিটিসেল।
এদিকে ২০০৫ সালের জুন মাসে সিটিসেলের ৪৫ শতাংশ মালিকানা কিনে নেয় সিঙ্গাপুরের কোম্পানি সিংটেল। বাকি ৬৫ শতাংশ শেয়ার ধরে রাখে সিটিসেলের মাতৃপ্রতিষ্ঠান প্যাসিফিক টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেড। জানা যায়, সিংটেল এই ৪৫ শতাংশ শেয়ারের বিপরীতে ২৫০ মিলিয়ন ডলার (১,৭৫০ কোটি টাকার সমপরিমান) পরিশোধ করে প্যাসিফিককে। কিš’ কর ফাঁকি দেওয়ার উদ্দেশ্যে কাগজপত্রে দেখানো হয় মাত্র ১৫০ মিলিয়ন ডলার। বাকি ১০০ মিলিয়ন ডলার মোর্শেদ খান বিদেশে পাচার করেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। তবে এ ব্যাপারে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে সিটিসেলের হেড অব মার্কেটিং ইন্তেখাব মাহমুদ জানান, ১৫০ নয় ১১৮ মিলিয়ন ডলারে সিংটেলের কাছে সিটিসেলের শেয়ার বিক্রি করা হয়েছে। বিদেশে টাকা পাচারের বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন তিনি।
১১ জানুয়ারি দেশে জরুরী অবস্থা ঘোষণার পর অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান শুরু হলে গত ১৬ মে সিটিসেলের মাতৃপ্রতিষ্ঠান রাজধানীর ১৪ মহাখালীতে অবস্থিত প্যাসিফিক টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেডের প্রধান কার্যালয় প্যাসিফিক সেন্টারে অভিযান চালায় র্যাব ও গুলশান থানা পুলিশ। অভিযানকালে প্যাসিফিক সেন্টারের ৩য় ও ১৩ তলায় সিটিসেলের সুইচ রুম ও অন্যান্য কক্ষ থেকে টেলিযোগাযোগ আইনের পরিপন্থী এবং টেলিযোগাযোগ লাইসেন্স বহির্ভূত বেশ কিছু কার্যক্রমে সিটিসেলের প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায়। এই ভবনের বিভিন্ন তলায় স্থাপিত যন্ত্রপাতির মাধ্যমে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিল সিটিসেল। র্যাব ও পুলিশ এসব যন্ত্রপাতি ও প্রামাণ্য কাগজপত্র আটক এবং সিটিসেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। এ সময় প্রায় ১২ ধরনের আলামত জব্দ করা হয়। পরে বিটিআরসির সহকারী পরিচালক জিয়ান শাহ কবীর বাদী হয়ে গুলশান থানায় এ ব্যাপারে একটি মামলা করেন সিটিসেলের বিরুদ্ধে। অবৈধ যন্ত্রপাতি স্থাপন ছাড়াও সিটিসেল গ্রাহকদের অবৈধ সার্ভিস প্রদানসহ ৪ এমবি ব্যান্ডউইথে ইন্টারনেট সার্ভিসের ব্যবহারের মাধ্যমে আদায়কৃত আনুমানিক ৬ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়। তবে বিটিআরসির একটি সূত্র বলেছে, প্রকৃত রাজস্ব ফাঁকির পরিমাণ উল্লিখিত অঙ্কের অনেকগুণ বেশি। সিটিসেল এখন মামালাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট উচ্চ পর্যায়ে তদবির চালিয়ে যাচ্ছে।
তবে সিটিসেল কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে আনীত এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এ প্রসঙ্গে সিটিসেলের হেড অব মার্কেটিং ইন্তেখাব মাহমুদ বলেন, সিটিসেল কোনো অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা করেনি। এফডব্লিউটি আমদানি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিটিআরসির অনুমতি নিয়েই আমরা এফডব্লিউটি আমদানি করেছি। আমাদের লাইসেন্স আছে। এফডব্লিউটি আমদানির নামে সিটিসেলের হুন্ডি ব্যবসায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেন ইন্তেখাব মাহমুদ। মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য বিটিআরসির সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে।
২০ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে দৈনিক ভোরের কাগজে রচনাটি লিখেছেন ইখতিয়ার উদ্দিন।
This Saturday all most of the CityCell dealers went to Khaja Tower, Mohakhali with an angry attitude and cause harm to CityCell’s partial office there. They ware angry because this mother fucker company is not giving them any commission from a long time.
Thanks your message is delightful.
I will definitely read your diary..
bye